সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া সেই ইউএনও শেখ রাসেল বদলি হয়ে পীরগাছায়

সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া ইউএনও শেখ মো. রাসেলকে রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। সাতক্ষীরায় কালের কণ্ঠের এক সাংবাদিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার পর দেশজুড়ে সমালোচিত হন এই প্রশাসনিক কর্মকর্তা। এবার তাকে বিতর্কের কেন্দ্র থেকে সরিয়ে নতুন দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ইউএনও রাসেলকে পীরগাছায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি তাকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ১৪৪ ধারা প্রয়োগ ও সার্টিফিকেট মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
কী ঘটেছিল সাতক্ষীরায়?
ঘটনার সূত্রপাত ২১ এপ্রিল ২০২৫, যখন কালের কণ্ঠের সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জেল দেন ইউএনও রাসেল।
অভিযোগ, সাংবাদিক টিপু স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করেছিলেন, যা ইউএনওর অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া ইউএনও’র বিতর্কিত ঘটনা
এ ঘটনায় ইউএনও রাসেলের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা হরণ এবং বিচারিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
দেশব্যাপী সাংবাদিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
এরপর ২৪ এপ্রিল সাংবাদিক টিপু জামিনে মুক্তি পান এবং বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে উঠে আসে। পরে প্রশাসন ইউএনও রাসেলকে পদায়নের নামে রংপুর বিভাগে বদলি করে। এই বদলি আদেশ আসে ৫ মে ২০২৫ তারিখে।
বিতর্কিত কর্মকর্তাদের রংপুরে পদায়ন?
ইউএনও রাসেলের বদলি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ এর আগেও পীরগাছার ইউএনও নাজমুল হক সুমনকে ঠাকুরগাঁওয়ের এডিসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছিল, যিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত শুরু করে।
সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া সেই ইউএনও শেখ রাসেল বদলি হয়ে পীরগাছায়
এই দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেকে বলছেন, “বিতর্কিত কর্মকর্তাদের রংপুরে স্থানান্তর যেন এক ধরনের পুনর্বাসন।” আবার কেউ বলছেন, “এটি প্রশাসনিক শাস্তির পরিবর্তে পুরস্কার।”
প্রতিক্রিয়া
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইউএনও রাসেলের বদলি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, এর মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
কেউ আবার প্রশাসনের নির্লিপ্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। অন্যদিকে, পীরগাছার বাসিন্দাদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।