স্মার্টফোন কিনে দিতে না পারায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা – চুয়াডাঙ্গায় হৃদয়বিদারক ঘটনা

স্মার্টফোন না পেয়ে আত্মহত্যা চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কান্তপুর গ্রামে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। স্মার্টফোন কিনে দিতে না পারায় অভিমানে আত্মহত্যা করেছে নূরতাজ (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে নিজ শয়নকক্ষে আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে।
পরিবারের সদস্যরা জানালার ফাঁক দিয়ে মেয়েটিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে জানালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ও মুন্সিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান।
স্মার্টফোন না পেয়ে আত্মহত্যা
নিহত নূরতাজ আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের কান্তপুর গ্রামের দিনমজুর আজাদ মালিথার ছোট মেয়ে। সে নীলমণিগঞ্জ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
বাবা-মায়ের অসহায়তা
নূরতাজের মা বলেন,
“মেয়েটা কয়েকদিন ধরে স্মার্টফোন চাচ্ছিল। কিন্তু তার বাবার পক্ষে তখনই কেনা সম্ভব হয়নি। আমি বলেছিলাম, নানাবাড়ি থেকে টাকা এনে হলেও কিনে দেব। কিন্তু ও আর সেই অপেক্ষা করল না…”
এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
কীভাবে ঘটে ঘটনাটি?
পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুরে গোসলের পর নূরতাজ নিজের ঘরে যায় এবং দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়।
অনেকক্ষণ কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে তার বড় বোন জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে দেখে—নূরতাজ গলায় ফাঁস দিয়েছে।
তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তার মরদেহ নামিয়ে আনেন।
পুলিশের বক্তব্য
আলমডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদুর রহমান (পিপিএম) বলেন,
“প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে স্মার্টফোন কিনে দিতে না পারার বিষয়টি উঠে এসেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
স্মার্টফোন না পেয়ে আত্মহত্যা সমাজের জন্য শিক্ষা
এই ঘটনা সমাজে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং পারিবারিক যোগাযোগের গুরুত্ব নতুন করে তুলে ধরেছে।
প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত আকর্ষণ, যোগাযোগ ঘাটতি এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতা। সব মিলেই তৈরি হয় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি।
অভিভাবক, শিক্ষক ও সমাজকে একযোগে কাজ করতে হবে কিশোরদের মানসিক চাপ, আবেগ ও প্রত্যাশা বোঝার জন্য। সময় থাকতে সতর্ক না হলে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে।